শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে রয়েছেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, আর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের পক্ষে রয়েছেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
এদিন বেলা সাড়ে বারোটার দিকে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে জেরা করেন ড.ইউনূসের আইনজীবী।
এর আগে, এ মামলার তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় গত ১৩ সেপ্টেম্বর।
চলতি বছরের ৬ জুন ড. ইউনূসসহ মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার মধ্যদিয়ে শুরু হয় বিচারকাজ। কিন্তু অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূসের পক্ষে হাইকোর্টে করা আবেদন খারিজ হলে আপিল করা হয়। কিন্তু সে আবেদনেও হাইকোর্টের খারিজ আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপর নিয়ম অনুযায়ী বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে গত ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলায় দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের সময় সাক্ষীকে জেরার সময়ে দফায় দফায় বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন দুপক্ষের আইনজীবীরা। একপর্যায়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এজলাস কক্ষ। উভয় পক্ষকে শান্ত করতে হস্তক্ষেপ করেন বিচারক নিজেই। সেদিন অবশ্য এজলাস থেকে সাংবাদিকদের বের করে দিয়েছিলেন বিচারক। বিষয়টি নিয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী আপত্তি জানালে ফের সাংবাদিকদের ঢোকার নির্দেশনা দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের এক শ্রম পরিদর্শক বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
পরে ওই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। সেই আবেদনে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন আদালত। একই সঙ্গে মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ ২০২২ সালের ১৩ জুন দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন।
বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৭ অগাস্ট রুল খারিজ করে রায় দেন। ফলে ইউনূসের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।