নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে একটি গোষ্ঠী ভয়ানক অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে অভিভাবকদের প্রতি এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর পরীবাগে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পরিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত পাঠ্যাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ১৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩১ লাখ নির্বাচিত বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে শিশুরা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে সে জন্যই নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নয়, ১১ বছর গবেষণার পর বাস্তবায়ন করা হয়েছে এই নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন শিক্ষাক্রমের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রায় আটশ গবেষক। তাদের প্রত্যেকের পরামর্শ ও মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রম জোর করে চাপিয়ে দেয়া নয় উল্লেখ করে দীপুমনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ভয়ানক অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। তাদের গোষ্ঠীগত স্বার্থসিদ্ধির জন্যই এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে। নির্বাচনের মৌসুমের কারণে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু রাজনৈতিক পক্ষ। তাদের মধ্যে রয়েছে অতি ডান, অতি বাম। তারা উস্কানি দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভয়ানক অপপ্রচার চলছে। এমনকি ধর্মীয় বিষয় নিয়েও উস্কানি দেয়া হচ্ছে। এজন্য শিক্ষাক্রমের সঙ্গে কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট নয় এমন ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমনকি পুরোনো ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিডিও তৈরি করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময় নিজেদের মধ্যে মজার ছলে বানানো ভিডিওকে শিক্ষাক্রমের ভিডিও বলে চালানো হচ্ছে।
মন্ত্রী এসব অপপ্রচারে অভিভাবকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা দেখুন, বুঝুন, আপনাদের শিশুদের সঙ্গে কথা বলুন, দেখুন তারা শিখছে কিনা।
নম্বর পাওয়াটাই মুখ্য নয় উল্লেখ করে দীপুমনি বলেন, অভিভাবকরা দীর্ঘ সময় একটি প্রক্রিয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত। তারা দেখতে চান, তাদের সন্তান কত নম্বর পেল, কত জিপিএ পেল। তবে নম্বর পাওয়াটাই মুখ্য নয়, মূল বিষয় হলো সন্তান কত ভালো মানুষ হলো। কারণ, ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি সন্তান যেন ভালো মানুষ হয় সেটাও একজন অভিভাবকর চাওয়া।
প্রযুক্তির সঙ্গে শিশুরা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে নতুন শিক্ষাক্রমে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিশুদের জগৎ আমাদের থেকে ভিন্ন। আমাদের জীবন এখন প্রযুক্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জীবন থেকে প্রযুক্তিকে বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল, তাই পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে, প্রযুক্তির সঙ্গে সহজেই অভিযোজন করার সক্ষমতা অর্জন করতে শিশুদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। তারা যেন প্রযুক্তির সঙ্গে সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে, নতুন শিক্ষাক্রম সেভাবেই প্রস্তুত করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও পাঠ্যাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম লিডার অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ।
উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনস্থ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ”সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম” (এসইডিপি) এর আওতায় ”স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম” এর পাঠ্যাভাস উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ৬৪ জেলায় ৩০০ উপজেলায় ১৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৫ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ৩১ লাখ নির্বাচিত বই বিতরণ করা হচ্ছে। আজকের অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষকদের হাতে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি।
1 Comment
These are in fact enormous ideas in concerning blogging.
You have touched some nice factors here. Any way keep up wrinting.