ভারতের বিপক্ষে দারুণ বোলিংয়ে দৃষ্টি কেড়েছেন তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব। জাতীয় দলে অভিষেকের পর দ্বিতীয় বলেই শিকার করেছিলেন রোহিত শর্মার উইকেট। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার কিছু পুরনো পোস্ট সামনে এলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। যার ফলে সাকিব এখন টক অব দ্য কান্ট্রি।
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী পেসার তানজিম সাকিবের সম্প্রতি অভিষেক হয়েছে জাতীয় দলে। অভিষেক ম্যাচেই দারুণ পারফর্ম করে যখন দারুণ এক ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার কিছু পুরনো পোস্ট সামনে চলে আসে। যে সকল লেখায় নারী বিদ্বেষী ফুটে উঠেছে। তার এমন কথাবার্তায় বিব্রত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। সাকিবের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট নিয়ে কথাও বলতে হয়েছে বিসিবিকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাকিবের পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলছেন অনেকেই। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নানা পেশায় থাকা নারীরাও। তাদেরই একজন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি।
গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ফেসবুকে এই বিষয়ে পোস্ট দেন নাটক ও চলচ্চিত্রের এই অভিনেত্রী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘তানজিম হাসান সাকিব বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন খেলোয়ার কিন্তু সে এদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া এবং বিজয় দিবস পালন করাকে ঘৃণা করে।তাহলে সে এদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলার অধিকার রাখে কি?এরকম রাষ্ট্রদ্রোহী খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে বিসিবি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে আশা রাখি।
এই ক্রিকেটার পেশাজীবী নারীদের নিয়ে যে নোংরা মন্তব্য করেছে,একজন কর্মজীবি নারী হিসেবে আমার সক্ষমতা-যোগ্যতা ও স্বাধীনতাকে তা চরমভাবে অপমান করে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন হীন মন্তব্যকারী ক্রিকেটারের আইনগত শাস্তি দাবী করছি আমি।দেশের লক্ষ কোটি কর্মজীবী নারীদের নিয়ে এমন বিদ্বেষ ছড়ানো খেলোয়াড়কে বাংলাদেশের জাতীয় দল থেকে বহিষ্কার করার দাবী জানাই।’
জ্যোতি তার লেখায় এটিকে বাকস্বাধীনতার অপব্যয় বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘আমি জানি এ প্রসঙ্গে চুপ থাকাই নিরাপদ ভেবে অনেকেই চুপ থাকবে,আবার নিজেকে স্মার্ট প্রমাণ করতে গিয়ে কিছু লোক ইনিয়ে বিনিয়ে ব্যাক্তি ও বাকস্বাধীনতার কথা বলবে।কিন্তু এই দুটোই ভয়ংকর।অন্যায় করা আর অন্যায় মেনে নেওয়া সমান অপরাধ বলে আমি মনে করি।আর বাকস্বাধীনতা যদি হয় অন্যকে অপমান, কুসংস্কার ছড়ানো তাহলে সেটা নিশ্চই বাকস্বাধীনতার মধ্যে পড়েনা।আমি স্পস্টভাবে তাই আমার অবস্থান পরিষ্কার করছি।’
সাকিবের মন্তব্যের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন,’মগজ ভর্তি নারীবিদ্বেষ ও ধর্মান্ধতা নিয়ে যেকোন মানুষ বাঁচতেই পারে,সেটা তার মতাদর্শ।কিন্তু যখন একজন প্রকাশ্যে সেসব পিছিয়ে থাকা মতাদর্শ নিয়ে বর্বর সময়কে ইঙ্গিত করে তখন সেই মতাদর্শকে আর বাড়তে দেওয়া ঠিক না।সাধারণ মানুষ হলেও এড়িয়ে যাওয়া যায়,কিন্তু একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটার যার লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার তাকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া যায়না।তাহলে ঘৃণার চাষাবাদ বাড়তে বাড়তে দেশ আইয়ামে জাহেলিয়ার দিকে আগাবে।’