কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা না থাকা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেটে ধস নামায় দেশের বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে তিন দিনের ব্যবধানে লিটারে ৫ টাকা কমে সয়াবিন তেল ১৫০ টাকায় এবং পাম তেল ১১৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা সরকারের বেধে দেয়া দরের চেয়ে অন্তত ১০ টাকা কম।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতি লিটার খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১১৯ টাকায় এবং সয়াবিন তেল ১৫০ টাকায়। অবশ্য বৃহস্পতিবারও (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রতি লিটারে ৫ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হয়েছে। মূলত বাজারে ক্রেতা সংকটের কারণে তেলের দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদিনেই কমছে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট। কয়েকদিনের ব্যবধানে অন্তত ৭০ ডলার কমে প্রতি টন সয়াবিন ১ হাজার ৩০ মার্কিন ডলার এবং পাম অয়েল ৮৯০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বছরে বাংলাদেশে প্রায় ২৩ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। যা দেশের ৮ থেকে ১০টি প্রতিষ্ঠান আমদানির পর পরিশোধনের মাধ্যমে বাজারজাত করছে।
বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের বাজার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। তাই বিদেশি বুকিং রেটের ওপর নির্ভর করে দেশের বাজারে এই তেলের দর উঠানামা। তবে এখন যেহেতু আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতেলের বুকিং রেট কম রয়েছে, তাই তার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। ফলে কমছে ভোজ্যতেলের দাম। একই সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় তেলের বাজার এখন নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভোজ্যতেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়।
এতে বলা হয়, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য কমায় দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমানো হয়েছে। ফলে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা এবং ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮২৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি লিটার খোলা পাম তেলের দাম ৪ টাকা কমিয়ে ১২৪ টাকা করা হয়েছে।
নতুন এ দাম রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
তারও আগে একইদিনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভা শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভোজ্যতেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেন।