চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল এলাকায় তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণ হলে অন্যান্য বন্দরগুলোও সুফল পাবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণ সংক্রান্ত এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের আমদানি, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে বে-টার্মিনাল এলাকায় তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণ হতে যাচ্ছে। এ টার্মিনাল দেশে আপদকালীন সময়ে জ্বালানি তেলের সংকট মোকাবেলায় গ্যাস ও জ্বালানির ‘স্টোরেজ ক্যাপাসিটি’ বৃদ্ধি এবং তরল জ্বালানি ও ভোজ্য তেল সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ ব্যবস্থায় সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণে পজিটিভ আছি। দেশের সার্বিক অর্থনীতির কথা চিন্তা করে দ্রুত এ টার্মিনাল নির্মাণ করা উচিত। এটি নির্মিত হলে অন্যান্য বন্দরগুলোও বেনিফিট পাবে।তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, ইস্ট কোস্ট গ্রুপ কোম্পানির চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে টার্মিনালটি নির্মাণে হাইড্রোকার্বন ও নবায়নযোগ্য সেক্টরে সক্রিয় দেশের অন্যতম বৃহৎ ইস্ট কোস্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইসি হোল্ডিংস লিমিটেড আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় তেল ও গ্যাস টার্মিনাল স্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইস্ট কোস্ট গ্রুপের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। এই এমওইউ’র আলোকে বন্দরের বে-টার্মিনাল এলাকায় সংরক্ষিত জমি থেকে তেল ও গ্যাস টার্মিনালের জন্য ২০০ একর জমিতে রেফ্রিজারেটেড এলপিজি টার্মিনাল, ল্যান্ড বেইজড এলপিজি টার্মিনাল, পেট্রোকেমিক্যাল প্রসেসিং টার্মিনাল, পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট স্টোরেজ টার্মিনাল, ভেজিটেবল অয়েল টার্মিনাল স্থাপনের জন্য কারিগরি সম্ভাব্যতা ও বাজার চাহিদা বিশ্লেষণ করে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি-বিদেশি বিনিয়োগসহ মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রসঙ্গত, দেশে গ্যাস ও জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও গ্যাস ও জ্বালানি স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পায়নি। কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকায় তেল ও গ্যাস মজুদের সক্ষমতা সামান্য বেড়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ১৯৫০ সালের পর তেমন একটা বৃদ্ধি পায়নি।