চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলকে কেন্দ্র করে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে পতেঙ্গাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়। খুলছে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থায় আরেকটি স্বপ্নদুয়ার। এরই মধ্যে পতেঙ্গায় গড়ে উঠতে শুরু করেছে পাঁচ-তারকা মানের একটি হোটেল ছাড়াও ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানা। এতে ব্যবসা ও শিল্পের যেমন সমৃদ্ধি ঘটবে, তেমনি এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানান, কর্ণফুলি নদীর তলদেশ দিয়ে করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এর নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ। এখন অপেক্ষা গাড়ি চলাচলের। টানেলের দুটি টিউবের মধ্যে পতেঙ্গা প্রান্ত দিয়ে গাড়ি ঢুকে বের হবে আনোয়ারা প্রান্ত দিয়ে। আবার আনোয়ারা প্রান্ত দিয়ে ঢুকে গাড়ি বের হবে পতেঙ্গা প্রান্ত দিয়ে।
এ টানেলকে ঘিরে এ এলাকায় জায়গার দামও বেড়ে গেছে প্রায় ১০ গুণ। টানেলটি চালু হলে কানেক্টিভিটি বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, টানেলটি ৩.৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ। টানেলের প্রতিটি সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। দুই সুড়ঙ্গে দুটি করে মোট চারটি লেন রয়েছে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্বে ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে।
এছাড়া টানেলের পাশেই অবস্থান পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন এখানে ঘটে হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম। টানেলটি চালু হলে এ সংখ্যা বাড়বে আরও কয়েকগুণ। সেই সঙ্গে সমুদ্রের পাশে বে টার্মিনাল চালু হলে বন্দরের সক্ষমতা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। এ টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে। এতে ব্যবসা ও শিল্পের যেমন সমৃদ্ধি ঘটবে, তেমনি পতেঙ্গা এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক ভিত্তিও মজবুত হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালেহ আহমদ চৌধুরী বলেন, টানেলের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে নেভাল এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের একটি পাঁচ-তারকা হোটেল। নগরীর আউটার রিং রোড এলাকায় গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় রেস্টুরেন্ট। এক সময় যে জায়গাগুলো কেউ কিনতে চাইতো না, এখন তার দামও আকাশচুম্বী। গড়ে উঠছে বিভিন্ন ধরনের শিল্প-কারখানা। আউটার রিং রোড এলাকায় এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে অনেক পণ্যবাহী গাড়ির পার্কিং।
এ বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলটি চালু হলে সামগ্রিকভাবে পতেঙ্গা অঞ্চলে আসবে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। এছাড়া যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। টানেলের কারণে কানেক্টিভিটি বাড়বে। নদীর ওপারে দুটি সিটি হবে; পাশাপাশি অর্থনীতিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।